1. admin@janatarchandpur.com : admin :
  2. wpsupp-user@word.com : wp-needuser : wp-needuser
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:২৭ অপরাহ্ন

ফরিদগঞ্জে কড়ৈতলী বাবুবাড়ির দিঘী নিয়ে দু’পক্ষের রেষারেষিতে জনমনে প্রশ্ন, দিঘী তুমি কার ?

কে. এম. হাসান, ফরিদগঞ্জ
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৬৮ বার পঠিত

ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কড়ৈতলীর বাবুর বাড়ির দিঘী নামে পরিচিত দিঘীটি নিয়ে যেন ধোঁয়াশা কাটছেই না। গত কয়েকদিনে কয়েকবার মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা এবং সেটি অপর পক্ষ প্রতিহত করার ঘটনায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এলাকায়। একাধিকবার মাছ ধরে নিয়ে যাওয়া চেষ্টার ঘটনা, দিঘীটির প্রকৃত মালিক কে? পুকুরে চাষকৃত মাছের মালিকইবা কে? এমন পরিস্থিতে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, দিঘী তুমি কার?

 

৮ নং পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শমশির আহম্মদের দেওয়া তথ্যমতে, সাবেক ২০৮ নং হালে ৩৫ নং কড়ৈতলী মৌজার ১৬২৯ সিএস দাগ ও ৪৯৩০ বিএস দাগে ৯.০৫ একর সম্পত্তি জুড়ে রয়েছে পুকুরটি।

 

মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সহিদউল্লা তফাদারের কাছ থেকে সাবলিজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন দাবি করা মুশফিকুর রহমান ইমু এই প্রতিবেদককে জানান, গত তিন বছর ধরে এই দিঘীটি আমি মুক্তিযোদ্ধা সহিদুল্লাহ তফাদার আঙ্কেলের কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকায় বৈশাখ থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত এক বছর করে মৌখিক ভাবে সাব-লিজ নিয়ে আসছি এবং মাছ চাষ করছি৷ গত দুই বছর আমি ঠিকঠাক মতো মাছ চাষ করতে পারলেও এ বছর টাকা দেওয়ার পর আমি দিঘীতে মাছ চাষ করায় আমার চাষকৃত মাছ তুলে নিয়ে যাওয়া ও হামলা করার চেষ্টা করছেন মুক্তিযুদ্ধ সংসদের একটি পক্ষ। এ বছর দিঘী লিজ নেওয়ার জন্য কত টাকা দিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্যান্য দু-বছরে ৬ লক্ষ টাকা দিয়ে সহিদুল্লাহ তফাদার আঙ্কেলের কাছে দিঘীটি সাব লিজ নেওয়া হলেও এ বছর তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুল্লাহ আঙ্কেল বর্তমান পরিস্থিতিতে পুরোপুরি অস্বীকার করে বলছেন আমি নাকি তাকে কোন টাকায় দেইনি। কড়ৈতলী বাজারসহ আশ-পার্শ্বের মানুষজন দেখেছেন আমি নিজে কি ভাবে দিঘীটি পরিষ্কার করে দিঘীতে মাছ ফেলার পর মাছগুলোকে নিয়মিত খাওয়া খাওয়ানো ও পাহারা দেওয়াসহ মাছের পরিচর্যা করে আসছি। মুক্তিযোদ্ধা সহিদুল্লাহ কাকা এখন যে বলছেন আমি নাকি তাকে কোন টাকাই দেইনি,আমি যদি টাকা না দিয়ে থাকি তাহলে গত বৈশাখ মাস থেকে আমি কিভাবে পুকুরে মাছ ফেলে তার পরিচর্যা করে আসছি? তার কাছ থেকে যদি আমি সাবলিজ নাইবা নিতাম এবং টাকা না দিতাম তাহলে আমার মাছ ফেলার সময় কিংবা পুকুরের আনুসাংঙ্গিক কাজ করার সময় তিনি কেন আমাকে বাধা দেননি? বর্তমান সময়ে যখনই দিঘীর মাছগুলো বড় হয়েছে এবং মাছ তোলার সময় হয়েছে তখনই আমার চাষকৃত মাছগুলো ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আমার পুকুরে এখন সবমিলিয়ে প্রায় ত্রিশ থেকে চল্লিশ লক্ষ টাকার মাছ আছে।

মুশফিকুর রহমান ইমু আরো জানান, ৩০ আগষ্ট আনুমানিক রাত ২ টায় সাবেক ইউপি সদস্য উজ্জ্বল পাটওয়ারী, মামুন পাটওয়ারী, শ্যামল বসু, সুমন সর্দার এই চারজন সহ বহিরাগত শতাধিক লোক নিয়ে আমার পুকুর থেকে মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। পরে আমি মাছ ধরতে বাধা দেওয়ায় এক পর্যায়ে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ বিষয়টি জানার পর এসআই সুমন ও এস আই হাসান সেদিন ঘটনাস্থলে এসে উভয়পক্ষ মাছ না ধরার নির্দেশ দিয়ে বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে থানায় যেতে বলেন৷ পরবর্তীতে পূর্ণরায় মামুন পাটওয়ারী গত ১৭ সেপ্টেম্বর আমার পুকুর থেকে মাছ ছুরি করেছেন, যার প্রমান হিসেবে আমার কাছে মাছ ছুরি করার সময়কালের ছবিও আছে।

 

সংবাদের অনুসন্ধানে কথা হয় কড়ৈতলী বাজারের কয়েজন ব্যবসায়ীর সাথে, এসময় ব্যবসায়ীরা জানান, গত তিন বছর ধরেই দেখে আসছি ইমু পুকুরে মাছ ফেলে সেগুলোর পরিচর্যা করছেন এবং পুকুরের যাবতীয় কাজ সে করছে ৷ কথা হয় ওই এলাকার বাসিন্দা বুলু চন্দ্র দাসের সাথে, তিনি বলেন সাবেক মেম্বরের ছেলে ইমু এই দিঘীতে মাছ চাষ করতে দেখতেছি গত কয়েক বছর। এখন আবার শুনি কে বা কারা পুকুরের মাছগুলো ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে৷ আবুল হাসেম জানান আমি নিজে পুকুরের মাছের খাবার দেওয়ার কাজ করেছি, ইমু আমাকে পুকুরে মাছের খাবার দেওয়ার জন্য কাজে নিয়েছিলেন৷

 

ফরিদগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সহিদউল্লা তফাদারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, সাবলিজ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না এবং তার সাথে এবিষয়ে কোন আলোচনাই হয়নি। দিঘীতে আমরা নিজেরা মাছ ছাড়ছি নিজেরাই মাছ চাষ করছি। এ নামের কাউকে আমরা কখনোই সাব-লিজ দেইনি, সবশেষ মুক্তিযোদ্ধা দেলু পাটওয়ারীকে দিয়েছিলাম, দেলু পাটওয়ারীর ছেলে মাছ চাষ করেছেন। কড়ৈতলী বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বললেন পুকুরে ইমুকে মাছ চাষ করতে দেখে আসছেন তারা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডাহা মিথ্যাবাদি, মিথ্যা কথা বলছে৷

 

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা মু‌ক্তি‌যোদ্ধা সংসদ কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মু‌ক্তি‌যোদ্ধা লেঃ এম এ ওয়াদুদ (অবঃ) এর কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে সাবলিজের বিষয়ে অভিযোগ এসেছে। এবিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমাকে কিছুই জানায়নি৷ বিষয়টি অবগত হওয়ার পর বিভিন্ন ভাবে খবর নিয়ে অমি জানতে পেরেছি কেউ একজন দিঘীতে মাছ চাষ করেছে। যদি লিজ’ই না দিতো তাহলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ওই ব্যক্তিকে মাছ ছাড়তে দিলো কেন, আর মাছ পালতে দিলো কেন?। পিজিক্যালি কেউ যদি দিঘীতে মাছ চাষ করে তাহলে কেউ একজন গিয়ে বললেই তো হলো না আমি দিঘী লিজ আনছি, আমি যদি লিজ এনেই থাকি তাহলে অন্যকেউ মাছ চাষ করে কিভাবে? মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নামে লিজকৃত কোন কিছু কমান্ডার ব্যক্তিগতভাবে সাবলিজ দিতে পারেন না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
All rights reserved © 2019
Design By Raytahost