কে.এম. হাছান ।। ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের টানা প্রচেষ্টার সার্থকতা মিলেছে। চব্বিশ বছর পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হয়নি। পিতা-পুত্র গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারা বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক সশ্রম কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামী। গতকাল শনিবার তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ওই রাত এক ঘটিকায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, উপজেলার ৯নং গোবিন্দপুর (উত্তর) ইউনিয়নের শোভান গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ি প্রকাশ্য হুইয়ালি বাড়ির সিরাজ (৬০)। হত্যা চেষ্টা মামলায় তার অপরাধ প্রমাণিত হয়। এতে তাকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত। রায়ের দিন তিনি হাজির ছিলেন না। খবর শুনে তিনি আত্ম গোপন করেন। ২৪ বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়িয়েছেন।

অপরদিকে, তারই এক ছেলে আবদুল কাদির (৩০)। একটি চুরির মামলায় বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক তার তিন বছর সশ্রম কারা দন্ডের রায় প্রাপ্ত হন। ওই মামলায় জামিন নিয়ে তিনি আত্ম গোপন করেন। মামলায় সন্দেহাতিতভাবে তিনি অপরাধী সাব্যস্ত হন। এতে, তার তিন বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ হয়। আদেশের পর তিনি আত্ম সমর্পণ করেননি। পালিয়ে ছিলেন দীর্ঘ ১০ বছর।

পুলিশ ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের একজন ইউপি সদস্য জানিয়েছেন, সংসারে স্ত্রী ও সন্তান থাকাবস্থায় সিরাজ চট্টগ্রামে অপর একটি বিবাহ করেন। এক পর্যায়ে, ওই স্ত্রীকে সাথে নিয়ে ফরিদগঞ্জের শোভান গ্রামের বাড়িতে ওঠেন। কয়েক দিন পর, ওই স্ত্রীকে বাড়ির অদূরে নিয়ে জীবনে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। ওই স্ত্রী আহত অবস্থায় জীবন বাঁচাতে সক্ষম হন। এরপর, তিনি হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করেন।

অপরদিকে, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চুরির মামলায় অভিযুক্ত হন সিরাজের ছেলে কাদির। এতে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের হয়। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে সন্দেহাতিতভাবে অপরাধ প্রমাণিত ও তিন বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ হয়।

পাঁচ ও তিন বছর কারাদন্ড এড়াতে পিতা ২৪ বছর ও পুত্র ১২ বছর পালিয়েছিলেন। কিন্তু, পুলিশের প্রচেষ্টায় শেষ রক্ষা হয়নি। তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায়, বিশ^স্ত সূত্রে খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানার এ.এস.আই. গোলাম মহিউদ্দিন ও এ.এস.আই. নাইম সাইফ শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক এক ঘটিকায় শোভান গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।

এ বিষয়ে, ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে পিতা-পুত্রকে গ্রেপ্তারের তথ্য সঠিক বলে জানান। তিনি বলেন, অপরাধীদের আইনের আওতায় নিতে পুলিশ বাহিনী বদ্ধ পরিকর রয়েছে।