1. admin@janatarchandpur.com : admin :
  2. wpsupp-user@word.com : wp-needuser : wp-needuser
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:৫৪ অপরাহ্ন

শহীদ দিবস

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
  • ২০ বার পঠিত

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি

বাংলা ভাষা আন্দোলন ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব বাংলায়(বর্তমান বাংলাদেশ)সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন।১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে এ আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও বস্তুত এর বীজ রোপিত হয়েছিল বহু আগে।অন্যদিকে এর প্রতিক্রিয়া ও ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে বৃটিশ ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ ও ভারত অধিরাজ নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়।পাকিস্তানের ছিল দুটি অংশ পূর্ব বাংলা আর পশ্চিম পাকিস্তান।১৯৫৫ সালে পুনর্নামাঙ্কিত করে পূর্ব বাংলার নামকরন করা হয় পূর্ব পাকিস্তান।এ দুই অংশের মধ্যবর্তী দূরত্ব ছিল প্রায় দুই হাজার কিলোমিটারেরও বেশি।পাকিস্তানের এ দুই অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক,ভৌগোলিক ও ভাষাগতদিক থেকে অনেক গুলো মৌলিক পার্থক্য দেখা দেয়।১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অধিরাজ্য সরকার পূর্ব পাকিস্তান তথা পূর্ব বাংলাকে ইসলামিকরণ তথা আরবিকরণের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে যে,উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা।পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে আরবি হরফে বাংলা লিখন অথবা সমগ্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা আরবি করারও প্রস্তাব দেয়া হয়।আবার সমগ্র পাকিস্তানের সকল ভাষা লাতিন হরফে লেখার মাধ্যমে বাংলার রোমানীকরণের প্রস্তাবও করা হয়।এসকল ঘটনার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলায় অবস্থানকারী বাংলাভাষী সাধারন মানুষের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয়।পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী মানুষ আকস্মিক ও অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেনি এবং মানসিক ভাবে মোটেও প্রস্তুত ছিলনা।ফলে বাংলা ভাষার সমমর্যাদার দাবীতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে।আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল,সমাবেশ বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

 

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি(৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮)১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।মিছিলটি ঢাকা মেডিকেলের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা ভঙ্গের দায়ে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়।গুলিতে নিহিত হন বাদামতলি কমার্শিয়াল প্রেসের মালিকের ছেলে রফিক,সালাম,এম.এ ক্লাসের ছাত্র বরকত ও আব্দুল জব্বার সহ প্রায় ১৭ জন ছাত্র-জনতা। এ ঘটনার প্রতিবাদে সমগ্র পূর্ব বাংলায় তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।২১শে ফেব্রুয়ারির ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিদ্রোহ শুরু হয়।২২শে ও ২৩ শে ফেব্রুয়ারি সারা বাংলা হরতাল পালন করে এবং বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে।২২শে ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহীদ হন শফিউর রহমান শফিক,রিক্সাচালক আউয়াল,অলিউল্লাহ নামক এক কিশোর।এসকল ঘটনার প্রতিবাদে মুসলীম লীগ ২৩ তারিখে সংসদীয় দল হতে পদত্যাগ করেন।ছাত্ররা রাতারাতি শহীদ মিনার নির্মান করে যা ২৪ শে ফেব্রুয়ারিতে শফিউর রহমানের পিতা উদ্বোধন করেন।পরে আবার ২৬ তারিখে দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক আবুল কালাম শামসুদ্দিন আনুষ্ঠানিক ভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন।

 

পূর্ব পাকিস্তানের মানুষদের অদম্য আন্দোলনের ফলে ১৯৫৪ সালের ৭ই মে পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বিকৃতি দেয়।১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধানের ২১৪ নং অনুচ্ছেদে উর্দু ও বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা লাভের পর বাংলা হয় এদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।১৯৮৭ সালে বাংলাভাষা প্রচলন আইন প্রণিত হয়।১৯৯৮ সালে কানাডায় বসবাসকারী রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম প্রথম বাংলাকে আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রভাষা করার দাবী জানান।পরবর্তিতে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ১৮৮ টি দেশের সমর্থনে ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষনা করে যা ২০০০ সাল হতে সারা বিশ্বে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।দিনটি শহীদ দিবস নামেও পরিচিত।পৃথিবীতে বাঙালিই একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে।তাই বাঙালী হিসেবে আমরা গর্বিত।

 

 

 

 

জোবায়রা ইফতেখার

এম.এড( ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)

সহকারি শিক্ষক

ভাটি রসুলপুর সরকারি প্রা. বিদ্যালয়

মতলব

উত্তর,চাঁদপুর।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
All rights reserved © 2019
Design By Raytahost